ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের একটি মৌখিক পরীক্ষায় মুখ না দেখানোয় এক নারী শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তাকে ওই পরীক্ষায় উপস্থিতির স্বাক্ষরও করতে দেননি সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা।
জানা গেছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় সেমিস্টারের ভাইভা দিতে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী। ভাইভা বোর্ডের সদস্যরা মুখ দেখতে চাইলে পর্দা (নিকাব) করার কারণে ওই শিক্ষার্থী তাতে অসম্মতি জানান।
লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষার্থী। ১৪ সেপ্টেম্বর আমার মৌখিক পরীক্ষা ছিল। পর্দার বিধান অনুযায়ী আমি মুখে নিকাব পরে পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশ করি। সম্মুখ থেকে নিকাব খোলা সাপেক্ষে শিক্ষকরা আমাকে উপস্থিতি স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি বিনয়ের সাথে তাদের জানাই, আমি নন মাহরামের সামনে নিকাব খুলি না। কিন্তু শিক্ষকদের বক্তব্য নিকার না খুললে বা মুখ প্রদর্শন না করলে তারা মৌখিক পরীক্ষা নেবেন না এবং উপস্থিতি স্বাক্ষরও করতে দেবেন না। ’
তার ভাষ্য, ‘আমি আবারও আমার অপরাগতার কথা তাদের জানাই এবং অনুরোধ করে নিকাব পরা অবস্থায়ই আমার মৌখিক পরীক্ষাটি নিতে। কিন্তু তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন এবং পূর্ববর্তী সেমিস্টারেও আমার সাথে অনুরূপ ঘটনাটি ঘটেছিল। যদিও শিক্ষিকাদের আমার মৌখিক পরীক্ষাটি নেয়ার সুযোগ ছিল, তবু আমি সে সুযোগ পাইনি। ’
জানা গেছে, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন শামী ওই ভাইভা বোর্ডে সভাপতিত্ব করছিলেন। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন, অধ্যাপক ড. ভীস্মদেব চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক সোহানা মেহবুব ও ড. তারিক মনজুর।
এ বিষয়ে ভাইভা বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন শামীম বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী ভাইবা বোর্ডে পরীক্ষা দিতে এসেছিল। বোর্ডে আমরা চারজন ছিলাম। সে মুখ ঢেকে পরীক্ষা দিতে এসেছিল। আমরা তাকে বলেছি, তুমি মুখ খুলে তোমার পরিচয় শনাক্ত করো। বারবার বলা সত্ত্বেও সে মুখ খোলেনি। আমরা বলেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করতে হবে। তাকে বারবার বলার পরও সে মুখ খোলেনি, বরং চলে গেছে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তাকে এভাবে বলেছি যে, মা তুমি আমার মেয়ের মতো। তুমি পরীক্ষা দেওয়ার আগে পরিচয় শনাক্ত করো, তারপর পরীক্ষা দাও। আমরা তোমাদের পিতৃতুল্য শিক্ষক। সে তারপরও মুখ খোলেনি এবং চলে যায়।
লিখিত বক্তব্যে নারী শিক্ষক দ্বারা অথবা সব শিক্ষকের সামনে নিকাব পরা অবস্থায় মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী।